২৩-০৪-২০২০

আকাশ কালো মেঘ করে, শোঁ-শোঁ দমকা হাওয়া বইয়ে ঢাকায় বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির অনুভূতিটা একটা খুব আনন্দের অনুভূতি। এসময়ে রাস্তায় আটকে গিয়ে বিরক্ত লাগলেও, বৃষ্টি ভালো লাগে। আল্লাহর রহমত হলো এই বৃষ্টি। ফুল-ফল-ফসল ফলায় এবং মাটিকে উর্বর করে এই বৃষ্টি। আল্লাহ আমাদের জন্য কল্যাণময় বৃষ্টি দিন। মহামারীর এই দুর্যোগের দিনে আমাদের ক্ষমা করে আমাদের ওপর রহমতের ঝরণাধারা ঝরিয়ে দিন, হে আমাদের রব! বৃষ্টির সময় দোয়া কবুল হয়, আসুন আমাদের জন্য ক্ষমা ও দয়ার প্রার্থনা করি...  

টুকরো কথা ৪

ভালোবাসা আর ভালোলাগার মধ্যে পার্থক্য কী?
একজন জ্ঞানী ব্যক্তি সুন্দর উত্তর দিয়েছিলেন--
তোমার যখন কোন ফুল ভালো লাগবে, তুমি তাকে ছিঁড়ে নেবে।
যখন তূমি ফুলকে ভালোবাসবে, তুমি গাছটাতে প্রতিদিন পানি দেবে।
যারা একথা বুঝতে পারে, তারা জীবনকে বুঝতে পারে।


* * * * * *
কোন মানুষ কি কখনো অন্য কাউকে বুঝে? সবাই অন্যকে নিজের মতন করে বুঝে। তাই, কেউ যখন ভালোবাসা পায়, তখন যে ভালোবাসা পায়, তার চেয়ে বেশি ভূমিকা যে ভালোবাসে তার।

ভালোবাসা পেয়ে নিজে বর্তে যাবার চেয়ে সম্ভবত বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো কৃতজ্ঞ হওয়া।


* * * * * *
জীবনে হোঁচট খেয়েছেন? আহত? পথহারা মনে হচ্ছে নিজেকে? হাল ছাড়বেন না। হেরে যাবেন না। উঠুন। ঘুরে দাড়ান প্রতিবন্ধকতার যন্ত্রণা থেকে। এগিয়ে চলুন। এভাবেই যেতে হয়, এভাবেই চলতে হয়। পৃথিবীর জীবনটাই এমন। বারবার পরাজিত মনে হবে নিজেকে। কিন্তু প্রতিটি জেগে ওঠাই প্রকৃত সফলতা। বাকিটুকু তো কেবল আনুষ্ঠানিকতা!


* * * * * *
জীবনের ব্যর্থতাকে আপনি কেমন করে সামলে নেন সেটার উপরে নির্ভর করে আপনি গড়ে উঠবেন নাকি ধ্বংস হবেন।


* * * * * *
সবসময় বেশি সিরিয়াস থাকা শরীর-মনের জন্য উপকারী না। একটু কৌতুক, হাসিঠাট্টা, ছোটাছুটি করা প্রয়োজন। সময় পেলে প্রকৃতির সান্নিধ্যে ঘুরে বেড়ানোও প্রয়োজন। পৃথিবীর জীবনটা অত বোরিং না, পেইনও না। এবং অবশ্যই শুধুমাত্র সুখের জায়গাও না। তাই, খারাপ সময়কে গ্রহণ করে নিন। এবং অপেক্ষা  করুন, ভালো সময় অবশ্যই আসবে!


* * * * * *
আমাদের জীবনে আল্লাহ শত-শত মানুষ এবং হাজার হাজার ঘটনা উপহার দেন যার বেশিরভাগই কল্যাণকর। আমরা মাঝে মাঝে তার মাত্র একটি-দু'টি-তিনটি থেকে তিক্ততা, যন্ত্রণা, কষ্ট  পেয়ে কাতর হয়ে যাই, আশাহত হয়ে যাই। এই বিশাল পৃথিবীর যিনি মালিক, তিনি তার আপন মহিমায় সমস্ত কিছুকে নিয়ন্ত্রণ করছেন। আপনার-আমার শ্বাস-প্রশ্বাস, খাবারের যোগানও তার মাঝে একটি। যদি এই মূহুর্তেই খুব বড় রোগ হয়, যদি এখনই খাবার গ্রহণের, চোখে দেখার ক্ষমতা রহিত হয়ে যায়-- পারবো কি তা পুনরুদ্ধার করতে?  কেন আমরা তবু প্রাণভরা শুকরিয়ায় 'আলহামদুলিল্লাহ' বলে উঠিনা?

ভেবে কি দেখেছি আমাদের খাবারটা শস্যক্ষেত থেকে আমার হাত পর্যন্ত আসার পথে কত কৃষক, কত শ্রমিক, কত গুদাম, কোল্ড স্টোরেজ, বাস-ট্রাক-রিকসা-ভ্যান, মুটে-মজুর, বিক্রেতার হাত ঘুরে যত্নভরে একজন রাঁধুনির রান্নার ফলে আমাদের প্লেটে উঠে এসেছে? আল্লাহ তার নিজ দয়ায়, মহিমায়, ঔদার্যে ও ক্ষমায় ঘিরে রেখেছেন আমাদের একেকটি জীবন। এই সৃষ্টির চারিধারে কেবল তারই সৃষ্টির মহত্ব।

আমাদের একেকটি প্রাণ। মাঝে মাঝে বড্ড চিন্তার অতীত এক মিরাকল মনে হয়। আল্লাহ যেন আমাদেরকে তার দয়া ও ভালোবাসায় জড়িয়ে রাখেন।

একজন স্নিগ্ধ ও কোমল মনের মানুষের সাথে কিছুসময় সুন্দর কথোপকথনের অনুভূতি বর্ণনাতীত আনন্দময়।


* * * * * *
যে উপেক্ষা করতে শেখেনি, সে কোনদিন বড় হতে পারেনি।


* * * * * *
কোন কাজে সফলতা অর্জনের মূল চাবি হলো কাজটিকে ভালোবাসা, সে যত ছোট কাজই হোক না কেন। কাজটির তুচ্ছ অংশগুলোকেও সমান ভালোবাসতে হয়।


* * * * * *
যখন আমরা ভালোবাসা দিয়ে, আনন্দ নিয়ে কোন কাজ করতে থাকি, কাজটি হয় সুন্দর এবং আমরা অর্জন করি দক্ষতা।


* * * * * *
কখনো কখনো আমাদের নিরবতায় একলা থাকার খুব প্রয়োজন-- আমরা কে তা বুঝতে এবং আমরা জীবনে সত্যিকার অর্থেই কী চাই তা উপলব্ধি করতে...


* * * * * *
আপনি যদি ঘুমাতে না পারেন, তাহলে শুয়ে থেকে দুশ্চিন্তা আর এলোমেলো চিন্তা না করে কিছু করুন যা আপনাকে প্রেরণা যোগাবে।


* * * * * *
সবাই আপনার মতন চিন্তা করে না। আপনিও অন্যদের মতন চিন্তা করেন না। কেউ কারো মতন চিন্তা করে না। সবাই অন্যদের থেকে একদম আলাদা।


* * * * * *
কখনো কখনো নিজ জীবন থেকে ছুটি নেয়া প্রয়োজন আমাদের। ব্যস্ততা থেকে একটু অবসর। সম্ভব হলে শহর থেকে দূরে কোন গ্রামীণ পরিবেশে প্রকৃতির মাঝে মুঠোফোন-অন্তর্জাল ছেড়ে একটু নিজের সাথে সময় কাটানো... নিজেকে চিনতে, নিজেকে বুঝতে। শরীরের ভেতরের আত্মাটাকে তার চাওয়া ও কাজগুলোর বোঝাপড়া করতে...


* * * * * *
যেকোন কাউকে ভালোবাসতে হলে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সাহস। সাহস লাগে অন্যের ভুল উপেক্ষা করতে, সাহস লাগে সংশয় কাটিয়ে উঠতে, সাহস লাগে অসুন্দরকে সুন্দর করে দেখতে। অথচ যে হৃদয় ভালোবাসতে পারে না, সে হৃদয় নানা জরাজীর্ণতা আর অসুস্থতায় ভরে যায়। সুস্থ থাকতে চাইলে প্রচুর ভালোবাসতে হয়। ভালোবাসতে চাইলে খুব সাহসী হতে হয়। ভালোবাসতে চাইলে মানুষের ভুল-ত্রুটি খোঁজার অসুস্থতা পেরিয়ে সুন্দরকে দেখতে চাওয়ার মন বানাতে হয়। সৌন্দর্য তো তাদের জন্য সবকিছুতেই ছড়িয়ে থাকে যারা তা দেখতে পায়!


* * * * * *
কোন কিছু করতে গেলে ভুল হবেই। তারাই কোন ভুল করেনা যারা কোন কাজ করার চেষ্টাও করেনা। ভুল হলেও এগিয়ে চলুন, সফলতা আসবেই ইনশাআল্লাহ!

লোকে কী ভাবলে সেকথা চিন্তা করতে থাকলে সারাজীবন তাদের কারাগারে বন্দী হয়ে থাকতে হবে।


* * * * * *
রাতের আধারে সবকিছু কেমন যেন রহস্যময় লাগে। প্রকৃতি অদ্ভুত গা ছমছম করা অনুভূতি দেয়। মানুষগুলোর আচরণ বদলে যায়, ভালোত্ব আর পশুত্ব দুই-ই প্রগাঢ় হয়ে যায়।

দিন ও রাতের পরিবর্তনে আছে আয়াত, নিদর্শন। উন্মুখ মন তাই খুঁজে চলে রাত আর দিনের মাঝে গেঁথে থাকা জ্ঞান। হতে পারে একটি উপলব্ধি বদলে দিতে পারে একটি জীবনের গল্প...


* * * * * *
বিভিন্ন রকম ভাষায় কথা বলতে পারা খুব মূল্যবান বিষয়।
কিন্তু সকল রকম ভাষায় মুখ বন্ধ রাখতে পারা অমূল্য বিষয়।


* * * * * *
জ্ঞান হলো কী কথা বলতে হবে তা জানা।
প্রজ্ঞা হলো কথাটি বলা উচিত নাকি উচিত নয় তা জানা।


* * * * * *
বোকা অথবা খারাপ মানুষেরাই বিনয়কে দুর্বলতা মনে করে। তাই বলে বিনয়ের মাহাত্ম্য কখনো কমে যায় না। বিনয়ী হওয়ার নিরন্তর প্রচেষ্টাতে ছাড় দেবেন না কখনো।


* * * * * *
মানুষের হাসিতে তাদের ব্যক্তিত্ব ফুটে ওঠে....


* * * * * *
আল্লাহ ভাঙ্গা জিনিসগুলোকে অদ্ভুত সুন্দরভাবে ব্যবহার করেন। মেঘ ভেঙ্গে বৃষ্টি ঝরে, মাটিকে বিদীর্ণ করে তাতে হয় ফসল, ফসল ভেঙ্গে তৈরি হয় বীজ, বীজ ভেঙ্গে হয় চারা। সুতরাং, আপনি যখন ভেঙ্গেচুরে যাবেন, প্রশান্তির সাথে আশ্বস্ত হোন এই ভেবে যে আল্লাহ আপনাকে খুব ভালো কিছুতে পরিণত করার পরিকল্পনা করছেন। [অনূদিত]


* * * * * *
অতীত যখন পেছন থেকে বারবার কেবলই ডাকতে থাকে, তখন তাকে দৃঢ়ভাবে উপেক্ষা করুন। নিশ্চিত জেনে নিন, আপনাকে তার নতুন কোন কিছুই বলার নেই।


* * * * * *
আমাদের শহরে আল্লাহর সৃষ্টি একেকটি মানুষের মাঝে ভালোবাসা ঢেলে দিয়ে পথচলা, কথোপকথনে, লেনদেনের মাঝে অন্যরকম আনন্দ আছে। এই ভালোবাসা হয়ত অনেকেই টের পায়না, কিন্তু যিনি হৃদয়ের সৃষ্টিকারী, যার নিপুণ ভালোবাসায় সৃষ্টিগুলো টিকে আছে, তার সৃষ্টিকে ভালোবাসা দেয়ার প্রতিদান তিনি তো অবশ্যই দেবেন!


* * * * * *
কখনো কখনো আমাদের নিরবতায় একলা থাকার খুব প্রয়োজন-- আমরা কে তা বুঝতে এবং আমরা জীবনে সত্যিকার অর্থেই কী চাই তা উপলব্ধি করতে...

দুঃখ-কষ্টগুলো হতে পারে সহানুভূতির বাগান। তুমি যদি তোমার হৃদয়কে সবকিছুর জন্যই উন্মুক্ত রাখতে পারো, তাহলে তোমার কষ্টগুলো হয়ে যেতে পারে ভালোবাসা আর প্রজ্ঞার প্রতি তোমার জীবনভর আকাঙ্ক্ষার সবচেয়ে বড় বন্ধু। ~জালালুদ্দিন রুমী

* * * * *
যখন তোমার শরীরের চিন্তা ও চাওয়ার উর্ধে এসে নিজেকে মুক্ত করতে পারবে, তখন এমনিতেই একদম নতুন এক জগতে প্রবেশ করবে। ~জালালুদ্দিন রুমী

প্রতিটি দিনকে পেছনে ফেলে আসাই ভালো। বয়ে যাওয়া পানির স্রোতের মতন যেন, সমস্ত দুঃখ-কষ্টকে ফেলে চলে যাওয়া। গতকালের দিনটি তো শেষ, সেই দিনটির সমস্ত গল্প বলা হয়ে গেছে। আজকে নতুন কিছু অংকুর মাটি বিদীর্ণ করে মাথা তুলে জাগবে। ~জালালুদ্দিন রুমী

* * * * * * * *
যদি তোমার অহংবোধ তোমার পথপ্রদর্শক হয়ে থাকে, তাহলে আর ভাগ্যের সাহায্যের জন্য নির্ভর করো না। তুমি দিনের বেলায় ঘুমিয়ে কাটাও আর রাতগুলো তো এমনিতেই ক্ষুদ্র। তুমি যখন জেগে উঠবে তখন হয়ত তোমার জীবনটা শেষ হয়ে যাবে। ~জালালুদ্দিন রুমী


* * * * * *
সৌন্দর্য ছড়িয়ে থাকে সমস্ত সৃষ্টির মাঝে। এমনকি আমাদের প্রতিদিনের প্রতিটি কাজের মাঝেও। যত্ন করে, ভালোবাসা দিয়ে করা কাজগুলো হৃদয়ে আনন্দ তৈরি করে।


* * * * * *
সৌন্দর্য ছড়িয়ে আছে সর্বত্র। কেবল সুন্দর মনগুলোই তা খুঁজে পায়...


* * * * * *
সত্যিকারের গন্তব্য খুঁজে পাওয়ার আগে একজন মুসাফিরকে বেশ কিছু মরীচীকার বিভ্রম পার হতে হয়।


* * * * * *
জীবনের চলার পথে মানুষের মাঝে যে ভালোবাসা আপনি ছড়িয়ে যাবেন, সে ভালোবাসাই ঘুরে ফিরে এসে আপনাকে স্পর্শ করবে; অন্য কোথাও, অন্য কারো মাধ্যমে।


* * * * * *
খাঁচার শিকের ভেতরে জন্ম নিয়ে খাঁচায় বেড়ে ওঠা পাখিরা মনে করে ওড়াওড়ি হয়ত এক প্রকার রোগ।


* * * * * *
জীবিত মানুষের চেয়ে মৃত মানুষ বেশি পরিমাণ ফুল উপহার পেয়ে থাকে। কেননা, অনুশোচনার অনুভূতি কৃতজ্ঞতার অনুভূতি থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী।~ অ্যানি ফ্র্যাঙ্কের ডায়েরি থেকে


* * * * * *
বিশালতার সাথে সৌন্দর্যের একটা কেমন যেন যোগ আছে। এই যে আকাশ। তার মাঝে সাদা মেঘ যখন ভেসে যায়। সে এক অদ্ভুত সুন্দর দৃশ্য। কিন্তু এই সৌন্দর্যকে আকাশ কিংবা মেঘ--কেউই উপলব্ধি করতে পারে না। শূণ্যে ভেসে থাকা মেঘগুলো জানেনা সেই বিশালতার নিচে সে কেমন শৈল্পিক স্নিগ্ধতা তৈরি করে মানব মনে। বিশালতার সাথে বেদনার কেমন যেন যোগ আছে। মানব মন ঠিক বুঝে না। মানুষ বুঝেই বা কতটুকু?


* * * * * *
আমি বললাম: আমার চোখ দুটোর কী হবে?
তিনি বললেন: পথের উপর তাদের স্থির রাখো।

আমি বললাম: আমার কামনার কী হবে?
তিনি বললেন: ওদের পুড়তে দাও।

আমি বললাম: আমার হৃদয়ের ব্যাপারে বলুন?
তিনি বললেন: এর মাঝে কী আছে তা আমাকে বলো।

আমি বললাম: কষ্ট আর ব্যথা।
তিনি বললেন: এগুলো থাকুক তোমার হৃদয়েই।

ক্ষতগুলো তো এমনই স্থান যার ভেতর দিয়ে তোমার মাঝে আলো প্রবেশ করে।

~জালালুদ্দিন রুমী

* * * * * *
সমস্ত উদ্বেগ মুছে ফেলে একদম মুক্ত হয়ে যাও,
চিন্তা করো তার কথা যিনি সকল চিন্তাকে সৃষ্টি করেছেন।
যখন সমস্ত দ্বার এখনো এত অবারিত
কেন তুমি তবু বন্দীশালাতেই বাস করো?
 ~ রুমী

* * * * * *
অনেক মানুষ দেখেছি যাদের জড়িয়ে রাখার মতন কোন কাপড় ছিলো না,
অনেক কাপড় দেখেছি যা যাদের জড়িয়ে রেখেছিলো তারা মানুষ ছিলো না।
~ জালালুদ্দিন রুমী

* * * * * *
প্রার্থনাগুলো কুয়াশাকে দূর করে দিয়ে প্রাণের শান্তিকে ফিরিয়ে এনে দেয়।~ জালালুদ্দিন রুমী

* * * * * *
যাও, তোমার নিজ হৃদয়ের দরজায় কড়া নাড়ো। ~ রুমী

* * * * * *
তুমি যদি তোমার মাঝে আমাকে খুঁজে না পাও তাহলে আর কোথাও পাবে না কোনদিন। আমি তো তোমার মাঝেই ছিলাম, আমার সূচনা থেকে। ~ জালালুদ্দিন রুমী

* * * * * *
সৌন্দর্য আমাদের চারপাশ থেকে ঘিরে রেখেছে। ~ জালালুদ্দিন রুমী

* * * * * *
নীরবতার মাঝে উত্তর খুঁজে পাওয়া যায়। ~ জালালুদ্দিন রুমী

ভালোবাসা ছাড়া জীবন হলো স্রেফ আবর্জনার মতন।

"আমি কি আত্মিক, নাকি বস্তুগত, নাকি শারীরিক ভালোবাসার দিকে মন দিবো?"

এসব প্রশ্ন করতে যেয়ো না। বৈষম্য তো কেবল বৈষম্যেরই জন্ম দেয়। ভালোবাসার জন্য এসব নানান রকম নাম, বিভাজন অথবা সংজ্ঞার প্রয়োজন নেই। হয় তুমি ভালোবাসার মাঝেই আছ, একদম কেন্দ্রে। নতুবা এই পরিসীমার বাইরে তুমি আছ, এই দুরত্বের হাহাকার বুকে নিয়ে।

~শামস তাবরিজি

* * * * * *
জীবনে তোমার যা-ই হোক না কেন, কখনো হতাশ হয়ে পড়ো না। এমনকি সবগুলো দরজাও যদি বন্ধ হয়ে যায়, একটি গোপন পথ তুমি খুঁজে পাবে যার হদিস কেউ জানেনা। তুমি হয়ত এখনো দেখতে পাচ্ছ না, কিন্তু এই পথের শেষে জান্নাতের অনেকগুলো বাগান আছে। কৃতজ্ঞ হও! তুমি যা চাও তা পাওয়ার পর শুকরিয়া করা তো সহজ, বরং যা চাইছ তা পাওয়ার আগেই শুকরিয়া করো।

~ শামস তাবরিজি

* * * * * * *
তুমি কি ভবিষ্যতের দিকে চেয়ে আছ জান্নাত-জাহান্নাম দেখতে? অথচ তোমার বর্তমানের মাঝেই রয়েছে সেগুলো। যখন তুমি কোন চুক্তি, যুক্তি আর প্রত্যাশা ছাড়াই ভালোবাসতে পারবে, তখন তুমি জান্নাত খুঁজে পাবে। যখন তুমি ঘৃণা আর মারামারিতে জড়িয়ে থাকবে, তুমি খুঁজে পাবে জাহান্নাম।

~শামস তাবরিজি

* * * * * * *
আল্লাহর বান্দারা তো কখনো ধৈর্যহারা হয় না। কেননা সে তো জানেই যে সদ্য প্রকাশিত বাকা চাঁদটির পূর্ণিমার চাঁদে পরিণত হতে সময় লাগবে। ~শামস তাবরিজি

কোন কিছুর জন্যই অপেক্ষা না করা প্রচন্ড ভয়ংকর একটা ব্যাপার।
~ এরিক মারিয়া রেমার্ক [থ্রি কমরেডস]

* * * * *
আমরা যা কিছু শুনি তার সব বাস্তবতা নিয়, বরং মতামত।
আমরা যা কিছু দেখি তার সবই সত্য নয়, বরং দৃষ্টিভংগি।
~মার্কাস অরেলিয়াস

* * * * * *
একটা সুউচ্চ পাহাড় আরোহণের পর থেকে একজন মানুষের চোখে আরোহণ করার মতন আরো অনেক পাহাড় চোখে পড়ে। ~নেলসন ম্যান্ডেলা

* * * * * *
 যখন খুব অন্ধকার হবে, তখন তুমি তারাদের স্পষ্ট করে দেখতে পাবো। ~রালফ ওয়ালডো এমারসন


* * * * * *
কখনো আশা হারিয়ো না, হে আমার হৃদয়। অদেখার জগতে তো অনেক অলৌকিক ঘটনার বসবাস। ~ জালালুদ্দিন রুমী


* * * * * *
জীবনযুদ্ধের সমুদ্রে আপনি যখনই হাল ছাড়বেন, তখনি ভেসে যাবেন। কখনো হাল ছাড়বেন না, কখনো না। শান্তির সময় তো খুব কাছেই!


* * * * * *
জীবন নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত, উদ্বিগ্ন হবার কিছু নেই। খুব ভাগ্যবান 'সবকিছু পাওয়া' মানুষরাও বেঁচে ভোগ করতে পারেনি চিরকাল। যে সময়টা চলে যাচ্ছে, তা-ও আসলে খুব সুন্দর। জীবনের সৌন্দর্য খুঁজে নিয়ে কৃতজ্ঞ হোন।


* * * * * *
জীবন থেকে যা হারিয়ে যায়, তা নিয়ে শোকে কাতর হওয়া তো বোকাদের কাজ। কেননা, যা আছে তা থেকে আরো হারিয়ে যেতে পারে। মানুষের তো কোন ক্ষমতাই নেই, সমস্ত ক্ষমতা শুধুই আল্লাহর। তিনি যাকে ইচ্ছা, যখন ইচ্ছা দান করেন। তাই, জীবনের বর্তমান নিয়ে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা উচিত।


* * * * * *
অতিচিন্তা: যে সমস্যাগুলো কখনো ছিলো না, সে সমস্যাগুলো তৈরি করে তার যন্ত্রণায় থাকার এক অদ্ভুত শিল্প।


* * * * * *
কেউ আপনাকে ফুল এনে দেবে সে আশায় অপেক্ষা করে বসে থাকবেন না। নিজেই বাগান তৈরি করুন এবং সে বাগানের ফুল দিয়ে আপনার আত্মাকে সাজান।

টুকরো কথা ৩

latest to 36

বিশালতা প্রকৃতির যেমন আছে, আকাশের আছে, সমুদ্রের আছে। মানুষের মাঝেও বিশালতা আছে -- জ্ঞানের, ব্যক্তিত্বের, মেধার। তবে প্রকৃতির বিশালতা অনুভব করতেও যেমন সকল হৃদয় পারে না, মানুষেরটুকুও সবাই বুঝে না।
*******
গতকাল সূর্যোদয় দেখেছিলেন এমন অনেক মানুষ আজ দেখার সুযোগ পাননি, তাদের জীবনের সময় শেষ হয়ে গেছে।
আমরা নতুন দিনটি উপভোগ করার সুযোগ পেয়েছি। একটি দিন আমাদের জীবন বদলে দিতে যথেষ্ট। আজকে আবার নতুন আশায় বুক বাধতে পারবো। নতুন প্রচেষ্টায় এগিয়ে যেতে পারবো কল্যাণের পথে।
*******
হাসিমুখ মানুষদের আমরা ভালোবাসি। আমরা সবাই জীবনযুদ্ধে কমবেশি বিদ্ধস্ত মানুষ, হাসিমুখ প্রাণবন্ত লোকদের জীবনের উদ্যম আমরা দেখতে ভালোবাসি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ইতিবাচক মানুষদের জীবনকে আমরা অনুপ্রেরণা হিসেবে নিই।
গোমড়ামুখো মানুষকে লোকে পছন্দ করেনা, তাদের এড়িয়ে চলে। নিজ জীবনের গ্লানি আর কষ্ট নিয়ে সবাই ত্যক্ত বিরক্ত থাকে, অন্যের কষ্ট নেবার জায়গা আর শক্তি কোথায়?
জীবনে যখন আমরা ব্যক্তিসত্ত্বার কষ্ট ছাপিয়ে অন্যের মুখে হাসি ফোটাতে পারি, অন্ততপক্ষে নিজের হাসিমুখ দিয়ে হলেও, তখন আমরা জীবনের সত্যিকার অর্থবাচকতা খুঁজে পাই। নইলে এই জীবন কি আর কোন জীবন হলো?
*******
যখন আমাদের হারানোর কিছু আর বাকি থাকে না, তখন আমরা নতুন করে জীবন নিয়ে পরিকল্পনা করার, সাজিয়ে নেয়ার আর গড়ে নেয়ার কাজ করতে পারি। [অনূদিত]
*******
কবে ভালোবাসা ফিরে আসবে আবার? হৃদয়ে হৃদয়ে...
কবে ভালোবাসা পাবে গাছের পাতা, পাখি, প্রাণী; ভালোবাসা পাবে চলতি পথের পথিক। ভালোবাসা পাবে অসহায়, আহত হৃদয়ের মানুষগুলো। ভালোবাসা তো পারে বদলে দিতে সবকিছু। আসলে, যা ভালো লাগে করতে হয়। বাইরে দেখতে যেমনটি লাগে, নিজেরা যেন তেমনটিই হই। নিজেরা যেমন,  তেমনটি যেন লোকে মনে করে। কী লাভ তীব্র বৈপরিত্যের মাঝে সদা বসবাসে?
*******
স্বপ্ন দেখুন এবং নিজ স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে লেগে থাকুন। নয়ত সারাজীবন আপনাকে তাদের পেছনে লেগে থাকতে হবে যারা তাদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছে। [অনূদিত]
*******
চারপাশের গাছগুলো আমাদের দেখিয়ে দেয় জীবনের মরে যাওয়া অংশগুলো কীভাবে ঝেড়ে ফেলে দিতে হয়।
*******
কখনো কখনো জীবনের সমস্ত চাপ, দায়, কর্তব্য, চিন্তাভাবনাকে প্যাকেটে ভরে পলিথিনে ভরে সিটি কর্পোরেশনের ডাস্টবিনে দূরে থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে আসতে হয়। জীবনের ক্লান্তি-ক্লেদগুলোকে ড্রেনের পানিতে ঢেলে দিতে হয়... সাথে শুধু কিছু দায়িত্ববোধ আর ভালোবাসা রেখে দিয়ে বাকি হিসেব-নিকেশ চুলোয় তুলে দিতে হয়।
এরপর কিছু উদাস দুপুর, লম্বা নিঃশ্বাস। ভালো লাগা এক কাপ কফি খুঁজে বের করা। শহরের ক্লান্ত-শ্রান্ত বিরক্ত মানুষগুলোর মাঝেই কিছু ভালোলাগা অনুভূতিকে খুঁজে বেড়ানো। ছোট্ট এই জীবনের এত চাপ নিয়ে কী হবে? হৃদয়ের শান্তি কেউ দেখতে পায় না, সে আমাদের একান্ত অনুভূতি...
*******
মানুষকে বিচার করতে থাকলে, তাদের ভালো-মন্দ হিসেব করতে থাকলে আপনি কখনো তাদের ভালোবাসার সুযোগ পাবেন না।
*******
শীঘ্রই যখন সবকিছু আবার ঠিক হয়ে যাবে, তখন আপনি জীবনের পেছনে ফিরে তাকিয়ে এই সময়গুলোর কথা ভেবে খুশি হবেন এই ভেবে যে আপনি কখনো হাল ছেড়ে দেননি।
*******
আপনার উপরে অন্যদের চাপিয়ে দেয়া জীবনকে যাপন করতে যাবেন না, আপনি সম্পূর্ণ আলাদা একটা মানুষ। নিজের মতই হোন, উন্নত করুন নিজেকে, নিজের মতন করেই।
*******
ভুল করলে ক্ষমা চাইতে শিখুন। ভুল মানুষই করে, সেটা হতেই পারে। কিন্তু ভুল করে অনুতপ্ত না হওয়া বা অহং ধরে বসে থেকে ক্ষমা না চাওয়া শয়তানের কাজ। এই অহং শুধু ধ্বংস এনে দেয়।
*******
আপনার জীবনটা এখন যেমন, জীবন আসলে অমনই...
সময় বদলে গেলেও জীবন আমাদের প্রতি একই রকম থাকে-- হয়ত চারপাশ বদলায়, মানুষগুলো বদলায়, জীবন একই রকম থাকে।
নিজ জীবন বদলাতে হলে হৃদয়কে বদলাতে হয়, পৃথিবীকে দেখার চোখটা বদলাতে হয়।
*******
প্রিয় হৃদয়! কখনো ভেবো না তুমি অন্যদের চেয়ে উত্তম। অপরের দুঃখগুলো সহানূভুতির সাথে শোনো। তুমি যদি শান্তি চাও, খারাপ চিন্তাগুলোকে মনের মাঝে রেখো না, পরনিন্দা কোরো না এবং এমন কিছু শেখাতে যেয়ো না যা তুমি জানো না। ~জালালুদ্দিন রুমী
* * * * *
আমার হৃদয় তো তোমার হাতে থাকা কলমের মতন
আমার সবকিছুই তোমার হাতে
আমাকে সুখী অথবা দুখী করে লিখতে পারো
তুমি আমার জন্য যা প্রকাশিত করো কেবল তা-ই আমি দেখি
আর যেমন করে থাকতে বলো, আমি তেমনটিই থাকি।
আমার সমস্ত অনুভূতিগুলো সেই রঙ ধারণ করে
যা তুমি রাঙ্গাতে চাও।
আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত
তুমি ছাড়া কেউ নয়।
দয়া করো, আমার ভবিষ্যতকে
আমার অতীতের চেয়ে সুন্দর করে দাও।
~জালালুদ্দিন রুমী
* * * * *
তোমার হৃদয়ের গভীরে একটি প্রদীপ আছে, জ্বেলে দিতে তৈরি হও।
তোমার আত্মায় গহীন শূণ্যতা আছে, তাকে পূর্ণ করতে তৈরি হও।
তুমি তা অনুভব করতে পারছ, তাইনা?
~ রুমী
* * * * *
তোমার শব্দকে উঁচু করো, কন্ঠ চড়িয়ো না। কারণ, বৃষ্টিই ফুলকে প্রস্ফুটিত করে, বজ্রপাত নয়।~জালালুদ্দিন রুমী
*****
* * * * * *
পৃথিবী আপনার বক্তব্য আর মতামত দিয়ে কোনদিন বদলাবে না। পৃথিবী বদলায় আপনার কাজ দিয়ে যে দৃষ্টান্ত আপনি তৈরি করেন তা দিয়ে।~পাওলো কোয়েলহো
* * * * * *
জীবনকে হয় দীর্ঘ নয়ত সংক্ষিপ্ত বলে মনে হয় যা নির্ভর করে আপনি জীবনে কেমন করে বেঁচে থাকতে চেয়েছেন তার উপরে।~ পাওলো কোয়েলহো
* * * * * *
পৃথিবীর কোন কিছুই পুরোপুরি ভুল নয়। এমনকি পড়ে থাকা নষ্ট ঘড়িটাও দিনে দু'বার সঠিক সময় দেয়। ~পাওলো কোয়েলহো
* * * * * *
পেছনের দিনে কেউ যেতে পারে না, কিন্তু সবাই সামনে এগিয়ে যেতে পারে। তাই আগামীকাল যখন সূর্য উঠবে তখন নিজেকে আপনার বলতে হবে, আজকের দিনটিকে আমি আমার জীবনের প্রথম দিন হিসেবে মনে করবো।~পাওলো কোয়েলহো
* * * * * *
সবাইকে দেখলে যেন মনে হয় অন্যদের কেমন করে জীবন যাপন করা উচিত সেই সম্পর্কে তাদের স্পষ্ট ধারণা আছে, কিন্তু কারোই তো তার নিজের জীবন-যাপন নিয়ে পরিষ্কার ধারণা নেই। ~পাওলো কোয়েলহো [দি-আলকেমিস্ট]
* * * * * *
আমরা যখন ভালোবাসি, তখন চেষ্টা করি নিজেকে আরো উন্নত করার। যখন নিজেকে উন্নত করার সাধনা করি, তখন আমাদের চারপাশের সবকিছুও উন্নত হয়ে যায়।  ~পাওলো কোয়েলহো
* * * * * *
নিজের ভেতরের শিশুটির হাত চেপে ধরুন কেননা শিশুদের কোন অসম্ভব কাজ করতেই আটকায় না। ~পাওলো কোয়েলহো
* * * * * *
কোন কিছু করতে দ্বিধা হলে তা করে ফেলুন। আপনি সবসময় পরে আফসোস করতে পারবেন। ~পাওলো কোয়েলহো
* * * * * *
আপনার সবচেয়ে ভয়ংকর শত্রু যেন আপনার দুই কানের মমধ্যবর্তী জায়গায় বসবাস না করে তা নিশ্চিত করুন।~পাওলো কোয়েলহো
* * * * * *
অনেক সময় নীরবতাই সবচেয়ে বড় উত্তর। ~পাওলো কোয়েলহো
* * * * * *
আপনি যখন 'বিদায়' জানানোর মতন সাহসী হবেন, দেখবেন জীবন আপনাকে নতুন করে 'স্বাগত' জানিয়ে পুরষ্কার দেবে। ~পাওলো কোয়েলহো
* * * * * *
"স্বপ্নকে সত্য হওয়াকে অসম্ভব করে ফেলার পেছনে যে একমাত্র কারণটি কাজ করে তা হলো ব্যর্থতার ভয়।"~পাওলো কোয়েলহো
* * * * * *
অপেক্ষা করা কষ্টকর, ভুলে যাওয়া কষ্টকর। কিন্তু ঠিক কী করতে হবে তা না জানা হলো সবচেয়ে বেশি কষ্টকর ভোগান্তি। ~পাওলো কোয়েলহো
*****
মানুষ হিসেবে ভুল করার অধিকার আপনার আছে। আপনি প্রতিদিনই ভুল করবেন, সেগুলো থেকে উত্তরণই আপনার প্রতিদিনের সফলতা। আপনার ভুলকে পুঁজি করে কেউ আহত করলে, আঘাত দিলেই কিন্তু আপনি ভেংগে পড়বেন না। আপনাকে সম্পূর্ণ ভুল মানুষ হিসেবে কেউ দাবী করলে তাতে কষ্ট পাবেন না। কেননা, আপনি এই মানুষটা একদিনে হননি।
আপনার গোটা জীবনের প্রতিটি দিনের ছোট ছোট সৌন্দর্য মিলেই এই আপনি। আল্লাহর পৃথিবী একদিনে উলটে যায় না। কারো কথায়, আচরণে আহত হবেন না। শক্ত হোন, নিজের কাছে সততা রাখুন। আল্লাহ ঠিক জানেন আপনার অন্তরের সৌন্দর্য, অন্যদের প্রতি আপনার ভালোবাসা, শুভকামনা আর দোয়া-- আপনি সবকিছুর বিনিময় অবশ্যই পাবেন। আপনার সংগোপনে করা সুন্দর চিন্তাগুলোর প্রতিবিম্ব আপনি খুঁজে পাবেন অন্য মানুষের আচরণে, কথায়।
আল্লাহর পৃথিবীটা অনন্য সুন্দর। এখানে সবকিছু মিলেই সবকিছু। অল্পতেই আশাহত হবেন না। :)
*****
আচ্ছা, ক'জন আমরা ঘৃণাহীন, হিংসাহীনভাবে নিঃশ্বাস নিতে পারি? পত্রিকা, চ্যানেলের খবরে, অপদার্থ বন্ধু/আত্মীয়র মুখে, ফেসবুকের পন্ডিতন্মন্য মানুষদের সমালোচনামুখর পোস্টে আমরা শুধু ঘৃণা, অবিশ্বাস, সন্দেহ, অশান্তি, পরনিন্দা, অপবাদ, মিথ্যায় ডুবে থাকি... শান্তির ঘুম কেমন করে আসবে জঞ্জালভরা হৃদয়ে, অতৃপ্ত ও অসুস্থ চোখে?
কেন লোকের গীবত-পরনিন্দা থেকে দূরে যাইনা? কেন যাবতীয় নেগেটিভিটি থেকে সরে আসিনা? কেন সবাইকে ভালোবাসতে পারিনা? কেন লোকের উত্তম গুণাবলী নিয়েই আলাপ করিনা?
সমস্ত রং যেখানে থাকে, সেটি হয় কালো। যেখানে কোন রং থাকে না, তার রং সাদা। হৃদয় যখন সমস্ত ক্লেদ ও পংকিলতামুক্ত হয়-- সেটি শুভ্র হৃদয়। সেটিই প্রশান্ত আত্মা।
নিজেদের শত্রু যেন নিজে
*****
একটা পর্বতের চূড়ায় ওঠার অনেকগুলো পথ থাকে। ভিন্ন ভিন্ন পথ অবলম্বন করেও হয়ত অনেকেই সেই একই গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে।
আমরা যা নিয়ে চিন্তা করি তা নিয়ে অনেকে অনেকভাবে চিন্তা করতে পারে। আমরা যা দেখি, তাকে অনেকে অনেক ভঙ্গিতে, অনেক দৃষ্টিকোণে, অনেক ভিন্ন কৌণিক অবস্থান থেকে দেখতে পারে। তারা আমার মতন নয় বলে তারা ভুল নয়। তারা তাদের মতন, আমরা আমাদের মতন।
যারা কম জানে ও কম বুঝে তাদের অতি-আত্মবিশ্বাসের কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের অজ্ঞতা।
*****
অনেক সময় আমাদের সংকট হয় ভাষার। একজন হয়ত যে কথা বলে, আরেকজন একই কথা অন্যভাবে বলে। কিন্তু তারা পরস্পরকে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করে, ভুল বুঝে, শত্রুতাও হয়।
একবার তিন ব্যক্তি একসাথে হেঁটে আসছিলো। একজন ছিলো আরব, আরেকজন পার্সিয়ান এবং অপরজন ইতালিয়ান। তারা পথে একটি দিরহাম পড়ে থাকতে দেখলো। তিনজনেই দিরহামটির উপরে ঝাঁপিয়ে পড়লো তা আয়ত্ব করার জন্য।
আরবটি বললো, এই পয়সা দিয়ে আমরা ইনাব কিনবো।
পার্সিয়ান লোকটি বললো, এই দিরহাম দিয়ে আমরা আঙ্গুর কিনবো।
ইতালিয়ান বললো, এই দিরহাম দিয়ে আমরা ভেনেটা কিনবো।
মাওলানা জালালুদ্দিন রুমী এই ঘটনার ব্যাপারে বলেন, তারা সবাই আসলে একই কথা বলছিলো। তাদের দরকার ছিলো একজন অনুবাদকের।
[শাইখ হামজা ইউসুফের লেকচারে শোনা ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এই লেখা]
*****
আপনি তো সেটাই বিশ্বাস করেন যা আপনি বিশ্বাস করতে পছন্দ করেন। ~ জনৈক
*****
যারা আপনাকে ভালোবাসে, বিশ্বাস করে তাদের কাছে আপনার কোন করে ফেলা কাজের জন্য ব্যাখ্যা দিতে যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। যাদের কাছে আপনার কৃত কোন কাজের ব্যাখ্যা দিতে যেতে হয়, তারা আপনাকে কখনো বিশ্বাসও করবে না, ভালোবাসবেও না। [সংগৃহীত ও অনূদিত]
*****
সে-ই কেবল ভুল করেনা যে কোনদিন কোন কিছু করার চেষ্টা করেনা।
*****
স্বপ্ন মানুষকে এগিয়ে যাবার প্রেরণা দেয়। স্বপ্নই আমাদের মাঝে আশা জাগিয়ে রাখে। স্বপ্নগুলো আমাদের হৃদয়কে সজীব রাখে। স্বপ্নহীনতা হৃদয়কে শুকনো মাটির মতন করে দেয়, জীবনের তাপে যা সময় পেরিয়ে ফেটে চৌচির হয়ে যায়। তাই স্বপ্ন দেখতে হয়। নিজের উপরে বিশ্বাস রাখতে হয়। ভালো কাজ করতে হয়। চারপাশের মানুষদের উপকার করতে হয়। তাদের ভালোবাসতে হয়।
ভালোবাসতে হলে স্বপ্ন দেখতে হয়। স্বপ্ন দেখতে হলে ভালোবাসতে হয়।
******
​সমুদ্রপাড়ে আমরা অদ্ভুত ভালোলাগায় আত্মহারা হয়ে যাই। আমরা হারাই বিশালতার মাঝে। আমরা আসলে বিশালতায় হারাতে ভালোবাসি। মানুষের মাঝেও এমন অনেক মানুষ আছে যাদের হৃদয় অমন কয়েকটা সমুদ্রকে ধারণ করে। বিশাল হৃদয়ের ভালোবাসায় আমরা অবগাহন করি আনন্দচিত্তে।
বিশাল সমুদ্র সৃষ্টি হয় আল্লাহর ভালোবাসায়। বিশাল হৃদয় তৈরি হয় ব্যক্তির সার্বজনীন ভালোবাসায়। যে হিসেব-নিকেশ ছাড়া ভালোবাসতে পারে, সেই অর্জন করে বিশাল হৃদয়, যে হৃদয়ের পাশে থাকলে সমুদ্র বিলাসের অনুভূতি জাগে।
হৃদয় বিশাল করতে ভালোবাসা লাগে। ভালোবাসতে হলে হৃদয়টা বড় হওয়া লাগে।
******
এক ভাই আমাকে একটা কৌতুক শোনালো। হাসতে হাসতে আমার চোখে পানি চলে এলো। পরে আবার আমাকে সে কৌতুকটি সে শোনালো। এবার আমি হাসলাম কিন্তু আগেরবারের মতন না। সে আবার আমাকে কৌতুকটি শোনালো। কিন্তু এবার আর আমি হাসলাম না।
সে তখন আমাকে বললো, তুমি যদি একই কৌতুকে বারবার হাসতে না পারো তাহলে তুমি কেন সেসব মানুষদের জন্য কাঁদো যারা তোমাকে বারবার কষ্ট দেয়? [সংগৃহীত ও অনূদিত]
******
ব্যর্থ হওয়াটা দুঃখজনক। কিন্তু আরো অনেক বেশি কষ্টদায়ক হলো কখনই সফল হবার চেষ্টা না করা।
******
সুখ কি কেবল সেটাই যা আমরা আশা করি আর তারপর তা পেয়ে যাই?
কখনো কখনো সুখ আমরা তৈরি করে নিই নিজ হাতে। কখনো সুখ থাকে আমাদের কাজের মাঝে, কখনো থাকে আমাদের নিজের মাঝেই, কখনো সুখকে পাওয়া যায় ত্যাগের মাঝে, নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার মাঝে।
সুখের প্রকৃত ঝর্ণাধারা মিশে আছে আমাদেরই মাঝে। আমাদের সত্ত্বায়, আমাদের দৃষ্টিভংগি, চিন্তায়, আবেগে, উপলব্ধিতে।
******
মানসিক চাপ শুধু আমাদের শারীরিক ক্ষতি করে, তা-ই নয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি আমাদের আশা, স্বপ্ন এবং বিশ্বাসকেও নষ্ট করে দেয়।
******
আমরা জীবনে যা পেয়েছি তার জন্য যদি শুকরিয়া করতে না পারি, তাহলে অন্তত সেইসব ভয়ংকর ব্যাপারগুলোর কথা ভেবে আমাদের শুকরিয়া করা উচিত যাদের ক্ষতি থেকে আমরা বেঁচে গেছি।
******
কোন কিছুকে বাস্তবে রূপ দিতে হলে সর্বপ্রথম অন্তত সেটির স্বপ্ন দেখতে হয়।
*****
পৃথিবীতে সুখে থাকার খুব সহজ একটা তরিকা আছে। স্রেফ বর্তমানে থাকুন। এটা একদমই কঠিন কোন বিষয় না। সুখী হতে হলে আপনাকে অনেক কিছু করে দুনিয়া উলটে দিতে হবে না। স্রেফ বর্তমানের মাঝে জীবনকে ধারণ করুন। বর্তমানকে খুব গভীরভাবে দেখুন, বর্তমানকে নিয়ে বেঁচে থাকুন, বর্তমানের মূহুর্তগুলোকে উপভোগ করুন।
অতীতের কারণে অনুশোচনা ও দুশ্চিন্তা আর ভবিষ্যত নিয়ে যত বেশি উদ্বেগ ও শংকা করবেন, আপনি তত বেশি অশান্তিতে থাকবেন। অতীত আর ভবিষ্যত নিয়ে দুশ্চিন্তা করে মূলত আপনি অন্য কারো/অন্য কিছুর কাছে নিজের স্বস্তি/শান্তি/সুখ জমা দিয়ে দিলেন।
******
অন্ধকার কখনো অন্ধকার দূর করতে পারে না, কেবল আলোই তা পারে... ঘৃণা কখনো ঘৃণা দূর করতে পারে না, কেবল ভালোবাসাই তা পারে।
*****
অনেক সময় বন্ধুর মন খারাপ সারানোর একটা তাৎক্ষণিক উপায় হলো তাকে নিজের কষ্টের বিষয়গুলো বলা, এতে অনেক সময়ই তাদের কষ্ট লাঘব হয়ে যায়। #SadButTrue
*****
পড়ুয়া মানুষদের সাথে কথা বলতেই আনন্দ। তারা অনেক শব্দ ধারণ করেন, তাদের কাছে অনেক আইডিয়া পাওয়া যায়, অনেক সুন্দর অনুভূতি ও চিন্তার সাথে পরিচিত হওয়া যায়। বইপড়ুয়াদের কল্পনাশক্তি অন্যদের চেয়ে প্রখর হয়। কল্পনাশক্তি বৃদ্ধির অনেকগুলো উপায়ের অন্যতম প্রধান ও শ্রেষ্ঠ উপায় হলো গল্প পড়া। মানুষের জীবনকে, জীবনবোধকে জানা খুবই কল্যাণকর। বই পড়া তুলনাহীন কল্যাণময়, অভাবনীয় সুন্দর!
*****
জীবনে যত বড় ঘটনাই ঘটুক না কেন, বড় আশা হলো -- এই ব্যাপারটাও একসময় কেটে যাবে। কোন কিছুই স্থায়ী নয়, ভালো সময়ও নয়, খারাপ সময়ও নয়।
*****
আপনার মনটাতেই আছে সবকিছু। আপনি যা চিন্তা করবেন, তা-ই হয়ে যেতে থাকবেন।
*****
অসম্ভব বলতে কোন বাস্তব ঘটনা নেই। এটা একটা মতামত মাত্র।
*****
আপনি কতটা শক্তিশালী তা আপনি উপলব্ধি করতে পারবেন তখনই যখন শক্তিশালী হওয়া আপনার টিকে থাকার সংগ্রামের একমাত্র উপায়।
*****
ভালো হোক, খারাপ হোক... দিন থেমে থাকবে না, থাকে নি, থাকে না। লম্বা করে একটা নিঃশ্বাস নিন। এসব চিন্তা থাকুক। তেমন কিছুই যখন আমাদের হাতে নেই, চিন্তাটুকু কেন করি শুধু শুধু?
*****
"সাধারণ হওয়াটাই অসাধারণ"-- একথা মুখে বললেও বেশিরভাগ লোকই সাধারণ কাউকে অবহেলা ও তাচ্ছিল্যে দেখে। সম্ভবত, এই জন্যেই সাধারণ থাকাটা অসাধারণ। ~ ইফতেখার মাহমুদ
*****
কখনো কখনো বের হয়ে যেতে হয় পথে, মুসাফির হয়ে। মুসাফিরের জীবন অভিজ্ঞতার। নানান রকমের অভিজ্ঞতা, অনুভূতি, জীবনবোধের মাঝেই তো পথচলা। জীবনটাই অমন অভিজ্ঞতা--কিছু ভালো, কিছু তিক্ত। কিন্তু অভিজ্ঞতা আমাদের তৈরি করে-- অজানাকে জানায়। মুসাফির হয়ে পথে প্রান্তরে ঘুরে ফিরে, নানান ধরণের মানুষের সাথে মিশে, মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে নিজেকে সমৃদ্ধ করা যায়।
পাওলো কোয়েলহোর 'দি আলকেমিস্ট' বইটিতে লেখক দেখিয়েছেন ছেলেটি যখন মিশরের উদ্দেশ্যে বের হয়ে আবার নিজ ভূমিতে ফিরে আসে-- দুই সত্ত্বার মাঝে বিস্তর ব্যবধান। ছেলেটি ট্রাভেল করে যা শিখেছিল তা তার জীবনকে, জীবনবোধকে বদলে দিয়েছিলো। আমাদের জীবনগুলোর ক্ষেত্রেও এমনটি হয়।
*****
খুব কষ্ট লাগছে কি? দ্যাটস দ্যা পয়েন্ট। দুনিয়াটাই এমন, অবিমিশ্র সুখে থাকার নাম দুনিয়া নয়। ঈমান থাকলে তার পরীক্ষাও থাকবে, তার পুরষ্কারও আছে। আরেকটু ধৈর্য ধরুন... এ সময়টা কেটে যাবে!
*****
প্রতিটি সূর্যোদয় আমাদের জন্য আরেকটি নতুন সম্ভাবনা নিয়ে আসে জীবনে। জীবনটাকে নতুন করে সাজানোর, ভুলগুলো শুধরে নেয়ার...
*****
আপনার যা পছন্দ করেন তা করতে পারা হলো স্বাধীনতা। আপনি যা করছেন তা পছন্দ করতে পারা হলো সুখ।
*****
আপনার যা পছন্দ করেন তা করতে পারা হলো স্বাধীনতা।
আপনি যা করছেন তা পছন্দ করতে পারা হলো সুখ।
*****
যখন যেখানে থাকি, তখন আসলে সেখানে থাকি না। পরে যখন পেছনে ফিরে দেখি, মনে হয় কেন আরো বেশি করে সেখানে থাকিনি তখন। ~ইফতেখার মাহমুদ
*****
জানেন তো? মানুষ কিন্তু তার স্বপ্নের সমান বড়। আপনার স্বপ্ন কত বড়? আপনার স্বপ্নে আপনি কতটুকু সময়কে ধারণ করেন? কতজন মানুষ? আপনার হৃদয়টার ভেতরের শুভকামনা ও ভালোবাসারা কতটুকু জায়গা ধারণ করে?
*****
আজ আপনি একটি গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিতে পারছেন কেননা কেউ একজন একদিন গাছের চারাটি যত্ন করে রোপন করেছিল।
*****
এক অন্ধ ব্যক্তিকে তার অন্ধত্ব নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি উত্তর দিলেন,
আল্লাহ আমাকে এতটাই ভালোবাসেন যে তিনি চান আমি মৃত্যুর পর তাকে দেখার আগে যেন আর অন্য কাউকে না দেখি।
 #দৃষ্টিভঙ্গি #অনুপ্রেরণা
*****
পৃথিবীতে সুন্দর কম নয়। আবার, কেবল কিছু মানুষ শান্তি, সুন্দর ও সুখের স্পর্শে থাকে সে ধারণাটাও ভুল। আসলে, সৌন্দর্য লুকিয়ে থাকে দ্রষ্টার চোখে, তার মনের মাঝে। যে দেখে, যা দেখে তাকে আপন মাধুরী মিশিয়ে রচনা করে।
তাই কিছু মানুষ চারপাশে অনিন্দ্য সুন্দর দেখতে পায়, কিছু মানুষ আনন্দ ও উচ্ছলতা পায় নিয়তই। সুন্দর তো ছড়িয়ে আছে চারপাশে; দেখতে পাচ্ছেন তো আপনি?
*****
আমাদের জীবনের জটিলতার মাঝে পড়ে আমরা অনেক সময় হাসতে ভুলে যাই। অনেকে আবার মনে করেন ব্যক্তিত্ব রাখতে হলে হাসতে হয় কম। কেউ কেউ ভালো মুসলিম হতে গিয়ে কম হাসেন। এরা সবাই ভীষণ ভুলে ডুবে আছে। কেননা আমরা হাদিস থেকে জানি, হাসিমুখে অন্যের সাথে সাক্ষাতও হলো সাদকা।
আপনি মন খুলে হাসুন। প্রাণ খুলে হাসুন। আপনার শরীর ভালো থাকবে। মন চনমনে হবে। প্রাণবন্ত মানুষ হোন। অন্তত চেষ্টা করুন। প্যাঁচানো চিন্তা থেকে নিজেকে মুক্তি দিন। নিজেকে নিজের চিন্তার কারাগারে আটকে রাখবেন না।
পৃথিবীটা খুব সুন্দর। আমাদের জীবনটাও। আলহামদুলিল্লাহ। দুশ্চিন্তায় আজকের দিনটি নষ্ট করবেন না। ইতিবাচক হোন। হাসুন, আনন্দিত হতে শিখুন খুব ছোট ছোট বিষয়েও।
দেখবেন জীবনটা কেমন বদলে যাবে!
*****
অতিরিক্ত তথ্য মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কেবলমাত্র কল্যাণকর জ্ঞানার্জন করুন, সুরক্ষিত থাকুন।
x
x

টুকরো কথা ২

ভালোবাসতে পারবেন না এখন সবকিছুকে? তুচ্ছ মানুষগুলোকে ভালোবাসুন। আপনি যখন ভালোবাসতে পারবেন, তখন বুকের ভেতরে বসন্তবাতাস অনুভব করতে পারবেন। ভালোবাসতে পারার মাঝে আছে শান্তি। কিন্তু যতক্ষণ আপনি অন্যদের প্রতি ঘৃণা করা থেকে, নিজেকে তাদের চেয়ে উচ্চমানের মানুষ মনে করা থেকে, খুঁতখুঁতানি স্বভাবে অশান্তিতে থাকা থেকে বাঁচতে না পারবেন-- আপনি ততক্ষণ পর্যন্ত ভালোবাসতে পারবেন না।


যে ভালোবাসতে পারে না, সে বেদনাক্লিষ্ট ও দুর্বল মানুষ। ভালোবাসুন, দয়া করুন। উপেক্ষা করুন নেতিবাচকতাগুলোকে। কারো খুঁত আর ভুল খুঁজতে চাইলে ভালোবাসা যায় না। মানুষ ভুলে ভরা প্রাণী, অন্যায় আর অপরাধে ডুবে থাকা প্রাণী। তাকে ভালোবাসতে পারার মূল কারণটা আপনার হৃদয়। কাউকে ভালোবাসার কৃতিত্ব কেবলই আপনার।


হৃদয়কে মুক্ত করুন সমস্ত জিঞ্জির থেকে, সমস্ত অশান্তি ও অতৃপ্তির জাল থেকে, সমস্ত ঘৃণার কাঁটাতারের বেড়ায় আটকে থাকার অসহায়ত্ব থেকে। হৃদয়কে শান্তি দিন, নিজেকে ক্ষমা করুন, নিজের নেতিবাচক, ঘৃণাবাচক, অশান্তিময় চিন্তাগুলোকে উপেক্ষা করুন। চেষ্টা করুন নিজ ভালোবাসাটা চারপাশে ছড়িয়ে দেয়ার। কারণে ভালোবাসুন, অকারণে ভালোবাসুন। যখন আপনি ভালোবাসতে পারবেন-- ভালোলাগায় আপনার চোখ ভিজেও আসতে পারে! হৃদয়ে শান্তির পরশ পেতে, বুকে বসন্ত বাতাসের স্পর্শ পেতে সমস্ত ভার ফেলে দিয়ে, ঘৃণা ফেলে দিয়ে, ভালোবাসুন।


********


অনেক সময় আমরা যে জীবনধারায় চলছি সেভাবে সেভাবেই চলতে এতটাই মত্ত হয়ে থাকি যে অনেক সুন্দর সুন্দর সম্ভাবনাকে আমরা প্রত্যাখ্যান করে ফেলি তা স্রেফ এই কারণে যে আমরা জানিনা সে সুযোগ দিয়ে কী করা যেতে পারে।~পাওলো কোয়েলহো


 * * * * * *

সোজা রাস্তায় দক্ষ চালক গড়ে ওঠে না। ~ পাওলো কোয়েলহো


* * * * * *

কুঠার ভুলে যায় আঘাতের কথা, গাছ তা ভোলে না। ~ পাওলো কোয়েলহো


*****

যে জিনিস আমরা বুঝিনা, তার প্রশংসা আমরা করিনা, তাকে আমরা ভালোবাসিনা। যে জিনিসের মর্ম আমরা বুঝিনা, তার প্রতি আমাদের মুগ্ধতা আসে না, আমরা আকর্ষণ অনুভব করিনা।


কোনো কিছু আমরা ভালোবাসিনা, পছন্দ করিনা তার মানে এটা কখনই না যে তা আসলে অমূল্যবান, অসুন্দর। মূলত আমাদের অনুভূতি আমাদের বোধের উপরে নির্ভরশীল।যা কিছু আমাদের বোধের সীমানায়  থাকে না, সে তো সুস্পষ্ট অনাকর্ষণীয়ই বটে!


******

ভালোবাসা পাওয়ার সূত্র জানতে চান? সেটার ক্ষেত্রে হয়ত অনেকগুলো বিষয় থাকতে পারে, আছেও। তাই সে হিসেব লম্বা কলেবরের হবে। তবে ঘৃণার সূত্র খুব সরল। আপনি ভালোবাসলেই যে বিনিময়ে ভালোবাসা পাবেন, এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। তবে ঘৃণা করলে তার বিনিময়ে কোনোদিন ভালোবাসা পাবেন না, তা নিশ্চিত। ঘৃণার বিনিময়ে কেবল ঘৃণাই পাওয়া যায়। ঘৃণা করে ভালোবাসা, যত্ন আর উত্তম আচরণের আশা কেবল মূর্খরাই করে। মানুষ শুধু নয়, পশুপাখিরাও ভালোবাসার অনুভূতি টের পায়। মুখের শব্দ দিয়েই কেবল আবেগের আদান-প্রদান হয় তা নয়। ভালোবাসার আলাদা তরংগ আছে যা সরাসরি হৃদয়কে আলোড়িত করে। ভালোবাসা আর ঘৃণার অনুভূতি মানুষ খুব সহজেই বুঝতে পারে।


*********

আপনি সারাদিন যা চিন্তা করবেন, পৃথিবীটা আপনার অমন মনে হতে থাকবে। আপনি যদি বিকৃত চিন্তা করতে থাকেন, আপনি দেখবেন চারপাশে অনেক বিকৃত মানুষ। এমনকি আপনার সাথেও সবাই বিকৃত আচরণ করছে। আপনার পৃথিবীটা আপনারই প্রতিবিম্ব। যারা নোংরা, তারা নিজের নোংরামিটাই খুঁজে পায় অন্যের মাঝে। সবার মাঝের নোংরা বিষয় নিয়ে কথা বলা, অন্যদের গায়ে কালিমা লাগানো, গীবত করা, সম্মানিতদের বেইজ্জতি করতে চাওয়া মানুষগুলো মূলত অহংকারী আর বেয়াদব, শয়তান তাদের চালকের আসনে থাকে। ধ্বংস করতে বিশেষ কোন গুণ থাকা লাগে না। আপনি সৃষ্টিশীলতার চেষ্টা না করলেই আপনি প্রবল ধ্বংসকারী হয়ে যেতে পারবেন।


সৃষ্টি করা সহজ কাজ নয়। সৃষ্টি করতে হলে একটা মানুষের নিজের ভেতরে শতবার ভাংতে হয়। নিজেকে বিলিয়ে, তার জ্বালা সহ্য করে মানুষ সৃষ্টি করে যেকোনো কিছু। ভালো মানুষেরা পারে অন্য মানুষের ভেতর থেকে ভালোটুকু বের করে আনতে।ভালো মানুষ পারে অন্যদের মাঝে আলো জ্বালাতে। ঠিক এই মূহুর্তেও আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন এই ভেবে যে আপনি সৃষ্টিশীল, সুন্দর চিন্তার কবেন নাকি কদর্য কুৎসিত সমালোচনাকারী হিসেবে নিজের অহংকারকে জারি রাখবেন। হৃদয়কে ভারমুক্ত করুন, নিজের নোংরা, কুৎসিত, কদাকার চিন্তাগুলোর চাষাবাদ না করে ভিন্ন কিছু করুন। কোনো ভালো কিছু করতে না পারলেও, খারাপ কিছু না করে থাকুন। খারাপ কিছু না করাও তো একটা ভালো কাজ, তাইনা?


********


জীবনটা স্বপ্নের মতন। চোখের সামনে যত অস্থিরতা, অশান্তি, উদ্বিগ্নতায় আপনি ডুবে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন-- এগুলো সবই ক্ষণস্থায়ী। জীবনের কোনো দুঃখই যেমন দীর্ঘস্থায়ী নয়, আনন্দগুলোও তেমনি। চোখটা বন্ধ করে চিন্তা করে দেখুন, ১০-১৫-২০ বছরের পুরোনো সময়গুলোকে আপনার মনে হবে অল্প ক'দিন আগের মাত্র! এর মাঝে পৃথিবী খুবই বদলেছে, আপনার জীবনটাও। কিন্তু জীবনের অনুভূতিগূলো একই রকম আছে। সেই দুশ্চিন্তা, কষ্ট-বেদনা, হাহাকার, স্বপ্ন। হয়ত বিষয়বস্তু বদলেছে, কিন্তু জীবনের প্রতি আপনার দৃষ্টিভঙ্গিটুকুর মতই আপনার জীবন।


ভেঙ্গে পড়বেন না, খুব বেশি চিন্তায় হারিয়েও যাবেন না। জীবনটা আল্লাহর দেয়া একটা উপহার। বিশ্বাস করুন, আপনি যতই কষ্ট পেয়ে অস্থির হয়ে যান না কেন, আল্লাহ ঠিকই এই সময়ের শেষে একটা সুন্দর সমাধান রেখেছেন। আপনি যতদিনে সেই কষ্টটা সামলে উঠবেন, ততদিনে নতুন কিছু এসে হাজির হবে, হতেই হবে। এটাই দুনিয়া।জান্নাতে পা দেয়ার আগ পর্যন্ত এই উথাল-পাথাল কষ্টের মাঝে বেঁচে থাকাই জীবন। ছেড়ে দিন সব ধরণের আশা। আল্লাহ যা আপনাকে উপহার দিচ্ছেন প্রতিদিনের জীবনে, মেনে নিন। মেনে নিয়ে বর্তমানকে সাজিয়ে তোলার চেষ্টাটার মাঝেই রয়েছে জীবনে সুখী থাকার এক নির্যাস।


******

আমরা কত শত ক্ষুদ্র স্মৃতি ধরে রাখি, জমিয়ে রাখি। একসময় চল ছিলো ডায়েরির পাতায় ফুল শুকিয়ে রাখা, বন্ধুদের লেখা চিঠি, স্কুল-কলেজের র‍্যাগ ডে-তে বন্ধুদের লিখে দেয়া মন্তব্য, দু'কথা। বিভিন্ন সময়ে চলে যাওয়া ঘটনার নানান পদচিহ্ন। অথচ যা যায়, চলেই যায়। খুব সুখস্মৃতিগুলো মাঝে মাঝে প্রেরণা হয়ে দাঁড়ায়, যখন জীবনের নতুন ধাক্কা এসে ফেলে দিতে নেয়, তখন পেছনের ঐ রোমন্থন অনুভূতি জাগাবে যে আপনার জীবনে প্রাপ্তি বলে অনেক কিছুই ছিলো, সে কারো ভালোবাসা হোক, অন্য কোন অর্জন হোক। এছাড়া অন্য স্মৃতিগুলো বরং ঝরে যেতে দেয়াই ভালো। যা চলে যায় তাদের চলে যেতে না দিলে কি আর আগামী আসতে পারবে? স্মৃতিতে নতুনকে আলিঙ্গন করার জায়গা দিতে তাই অযথা স্মৃতিদের ঝরে যেতে দিতে হয়। পেছনে ফিরে তাকালে কেউ আগাতে পারে না, ব্যক্তি মানুষও নয়, জাতিটাও নয়। ইতিহাস কেবল একটা স্পৃহা। শিক্ষা ও উপলব্ধিটুকু ছাড়া তা নিয়ে পড়ে থাকলে তা এগিয়ে যাবার বাধা। এমন বাধাগুলোকে জীবনে বেঁধে না রাখলেই কি নয়?


*****


তুমি তো অন্যের ততটুকু দেখেই একটা ধারণা করে বসো, যতটুকু দু'চোখে দেখতে পাও। আচ্ছা, কারো জীবনের কতটুকু তুমি জানতে বা বুঝতে পারো? তুমি কি জানো না, অদেখার একটা জগত আছে? সেখানে আছে জ্বিন, ফেরেশতা আর আল্লাহর আরো অজানা অজস্র সৃষ্টি। সেই জগতটা এই জগতের চেয়ে বেশি রোমাঞ্চকর, মোহনীয় --তা জানো? সে জগতটার অস্তিত্ব তো এই জগতের সমান্তরালেই।


তুমি কি তোমার ক্ষুদ্রতা অনুভব করতে পারো? তুমি ভাবতে পারো তোমার বিছানার কাঠের ঘুণপোকাটাও রিযিক পেয়ে বেচে আছে, আটলান্টিকের তলে একটা শেওলাও এই মূহুর্তে রিযিক পাচ্ছে তোমার আল্লাহর। তুমি কি বুঝতে পারছ এই সূর্যের যে আলো তোমার জানালার ফুটো হয়ে ফিনকি দিয়ে আলো ছড়াচ্ছে, ততটুকু আলোও কিন্তু তোমার জন্য বরাদ্দকৃত, সেটাও নিখুঁত করে তোমার আল্লাহর আদেশ।


তুমি কি ভেবে দেখেছ তুমি কতটা ক্ষুদ্র, আবার একই সাথে কতটা অসামান্য বিশেষ ভালোবাসা তোমার জন্য তোমার রবের পক্ষ থেকে? এই অদ্ভুত ক্ষুদ্রতা সত্ত্বেও মূল্যায়িত হবার অনুভূতি নিয়েও কি অন্তরে তুমি ঘৃণা, অহংকার, পরনিন্দা, হিংসার চাষ করতে পারো?


তুমি হৃদয়টা খুলে দিয়ে ওই আকাশের মতন করে দিতে পারো না? চেষ্টা করেই দেখো না, প্লিজ?


*******

তুমি কি ভালোবাসার পথের তীর্থযাত্রী হতে চাও? প্রথম শর্ত হলো নিজেকে তোমার এতটাই বিনয়ী করতে হবে যেন তুমি স্রেফ ধুলো আর ছাই। ~ জালালুদ্দিন রুমী


* * * * *

প্রিয় হৃদয়! কখনো ভেবো না তুমি অন্যদের চেয়ে উত্তম। অপরের দুঃখগুলো সহানূভুতির সাথে শোনো। তুমি যদি শান্তি চাও, খারাপ চিন্তাগুলোকে মনের মাঝে রেখো না, পরনিন্দা কোরো না এবং এমন কিছু শেখাতে যেয়ো না যা তুমি জানো না। ~ জালালুদ্দিন রুমী


* * * * *

অর্ধেকটা জীবন হারিয়ে যায় অন্যদের খুশি করতে গিয়ে।

বাকি অর্ধেকটা হারায় অন্যদের কারণে তৈরি হওয়া দুশ্চিন্তা ও উৎকন্ঠায়।

এই খেলা ছাড়ো, যথেষ্ট খেলেছো তুমি।

~ জালালুদ্দিন রুমী


*****''

যেদিন থেকে আপনি বর্তমানে বেঁচে থাকতে শিখবেন, সেদিন থেকে আপনি সুখে থাকতে পারবেন। অতীত-ভবিষ্যতের নিরর্থক বোঝা মাথায় নিয়ে কখনো সুখী হওয়া যায় না।



*****

মানুষ ভালোবাসা পেতে চাওয়ার কাঙ্গাল যতটুকু, সম্ভবত তার চেয়ে অনেক বেশিই কাঙ্গাল ভালোবাসা দেওয়ার জন্য। হয়ত অনেক ক্ষেত্রে পেতে চাওয়ার কাঙ্গালপনাটাই বেশি প্রকাশ হয় বলে অমন ধারণাই বেশি প্রচলিত। অথচ মানুষ হরদম এই ভীড়ের মাঝে এমন মানুষদেরকেই খুঁজে বেড়ায়, যাদের ভালোবাসা যায়। সেটাই খুঁজে পায়না। হয়রান হয়ে থাকে হৃদয়গুলো। আসলে, যারা মানুষকে কম বিচার করে, বেশি দয়া করে, সহজে মিশতে পারে, অতিরিক্ত চিন্তা না করে অন্যের উপকার করতে পারে --তারা সহজে ভালোবাসতে পারে, তারা সহজে শান্তি পেতে পারে। সুখী হবার সূত্রটা আসলে খুবই সহজ, কিন্তু নির্বোধদের কাছে তা খুবই কঠিন।


*****

সব ধ্বংসই কি আর ধ্বংস বয়ে আনে? ধ্বংসের মাঝে অনেকেই খুঁজে পান নতুন সৃষ্টির প্রেরণা। সকল অন্ধকারই কি আশার শেষ? যারা জানেন আঁধার কেটে যায়, যারা জানে আঁধারের অর্থ, তারা নতুন সূর্যালোকের প্রত্যয় ধারণ করেন বুকে। শয়তান যখন আদমকে (আলাইহিস সালাম) জান্নাত থেকে পৃথিবীতে আসতে দেখেছিলো, ভেবেছিলো হয়ত সে তার অপকর্ম সেরে ফেলতে পেরেছে। কিন্তু শয়তান হয়ত বুঝেনি যে ডুবুরি সমুদ্রে ডুব দিয়ে মণি-মুক্তা আহরণ করে আনে। জীবনের কষ্টগুলোতে ক্লান্ত-শ্রান্ত হয়ে পড়তে নেই। প্রতিটি কষ্টের মাঝে নতুন আনন্দের বার্তা আছে, প্রতিটি যন্ত্রণায় খুঁজে পাবেন স্বস্তির বাতাস। শুধু নিজের মতন করে জীবনকে চাইলে হবে? বরং যিনি জীবন দিয়েছেন, তার পরিকল্পনায় আস্থা রাখুন। তিনি যা পাঠাবেন, তার মাঝেই আছে ভালোবাসার চিহ্ন। জীবনে পাওয়া উপহারের ডালা খুলে দেখুন, খুঁজে পাবেন নতুন সম্ভাবনা, নতুন স্বপ্ন, নতুন অনুপ্রেরণার বার্তা।



*****

একজন দক্ষ মানুষ এবং নবিশ ব্যক্তির মাঝে পার্থক্য কি জানেন? নবিশ যতবার একটা কাজের জন্য চেষ্টা করেছে, দক্ষ ব্যক্তিটি তার চেয়েও অনেক বেশিবার কাজটিতে ব্যর্থ হয়েছেন।


*****


ব সুন্দর একটা ভবিষ্যত গড়ে নিতে সুন্দর অতীত থাকা বাধ্যতামূলক নয়। নিজেকে সুযোগ দিন। আপনার হাতে সময় আছে, বর্তমানকে কাজে লাগান। পেছনের দিকে না তাকিয়ে নিজের সেরাটুকু ব্যবহার করুন বর্তমানের মাঝে...



******

সকল ক্ষতিই মানুষ কাটিয়ে উঠতে পারে। মানুষ পরম অভিযোজন ক্ষমতার একটি প্রাণী। যাকে ছাড়া/যা ছাড়া জীবন কল্পনাও করতে পারেননি, তার বিদায়ের পরে আপনি দিব্যি খাবেন, ঘুমাবেন, হাসবেন। কোনো কিছুই চিরস্থায়ী নয়। দুঃখ নয়, গ্লানি হয়। এমনকি আনন্দের সময়ও নয়। দুনিয়া নিজেই অস্থায়ী। এর ভেতরের প্রতিটি প্রাণী, প্রতিটি সত্ত্বা, প্রতিটি কণা অস্থায়ী, নশ্বর। এমন কিছুর প্রতি কীসের এত আকাঙ্ক্ষা, এত স্বপ্ন আর কল্পনা-জল্পনা আমাদের যা কিছু সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে শেষ হয়ে যাবে?



******

আপনি হয়ত অনেক ভালো কাজ করতে চান। গাছে পানি দেয়াও তেমন। সেই চিন্তা থেকে একটা গাছে পানি দিলেন নিয়মিত। পরে দেখলেন গাছটা ক্যাকটাস, সেটার পানির দরকারই নেই ওভাবে। তাতে কি আপনার ক্ষতি হলো? নাহ! এটাও শিক্ষা হলো, জীবনের এক নিগূঢ় জ্ঞানার্জন হোলো। এমন হাজারো অনাকাংখিত শিক্ষার সমন্বয়ই আমাদের জীবন।


******

সব সমস্যার বেশি সরলীকরণ করলে সমস্যা। জটিল সমস্যার সরল সমাধান চাইতে গেলে সব হারাতে হয়। একই বুঝ দিয়ে সবাইকে বুঝতে গেলেও বিপদ।


******

শেষ কবে আপনি রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে তারা দেখেছেন? আমরা যাদের জ্বলতে দেখি টিমটিম আলোয়, সেই মূহুর্তের সেই আলোটাও তো কত শত বছর আগে ওখান থেকে বিচ্ছুরিত হয়েছিলো তা হিসেব করার বিষয়, কিন্তু অমন নক্ষত্র, গ্রহ তো ওই আকাশে, এই মহাবিশ্বে ছড়িয়ে আছে লাখে লাখে। ওদের একেকটার আকার আমাদের এই পৃথিবীর চেয়েও অনেক বড়। ওদের ওখান থেকেও আমরা একটা বিন্দুর মতই। এই বিন্দুতেই আমাদের সব। এই বিন্দুটুকুর আরো বিন্দু অংশ নিয়ে হাজার হাজার সৈনিক যুদ্ধ করেছে, সেনাপতিরা নিজেদের অমিত শক্তিশালী মনে করেছে হয়ত কোন একটা অংশ বিজয় করে। শাসকেরা নিজেদের ভাষ্কর্য উদ্বোধন করে, অফিসে অফিসে নিজের ছবি ঝোলায়; মনে করে তাদের এই শক্তি আর এই সময় হয়ত রয়ে যাবে। মহাবিশ্বের এইটুকু বিন্দুতেই শত-সহস্র ধর্ম রয়েছে যারা সবাই নিজেকে সঠিক মনে করে। এটুকুতেই রয়েছে অনিন্দ্য সুরের ঝংকার তৈরি করা লক্ষ লক্ষ সংগীতজ্ঞ, গভীর জীবনবোধ নিয়ে কবিতা ও গল্প লেখা হাজার-লক্ষ কবি আর ঔপন্যাসিক এসে চলেও গেছে। এটুকুর মাঝেই কত আঁকিয়ে যে এঁকেছেন ছবি, শিল্পে আর সংস্কৃতির চর্চার গভীরমূলে গিয়েছেন কত শত জন! এটুকুতেই রয়েছে কত প্রেমিক, কত প্রেমিকা। কত ভালোবাসা, কত টান আর কত আবেগ! কত অশ্রু আর কত হাসি। এখানেই রয়েছে হিংসা-বিদ্বেষ, কেউ কিছু পেলে অপরের জ্বালা ধরা মন্তব্য নির্নিমেষ। এটুকু জায়গায় কত মানুষের কত মত, কত ক্রোধ, কত অহং, কত ঘৃণা। অথচ এই সুবিশাল আয়োজন, এই অন্ধ ক্রোধান্ধ, আমিত্বকে জয় করার নিরুদ্দেশ যাত্রাপথে কারো কি তার ক্ষুদ্রতা নিয়ে আদৌ অনুভব হয়? এই টুকুন সৃষ্টির মাঝে, এই বিন্দুর মাঝে এত সিন্ধু যিনি স্থাপন করেছেন, তার বিশাল সৃস্টির দিকে নির্নিমেষ তাকিয়ে থেকে হয়ত আনমনেই অনুভব হবার কথা ছিলো, "হে আমাদের স্রষ্টা, আমাদের মালিক! আমাদের দয়া করুন। আমাদের চিন্তার আর হৃদয়ের সীমাবদ্ধতা ও ক্ষুদ্রতাকে সহ্য করতে না পারার এই জ্বালা থেকে মুক্তি দিন আপনার দয়া আর মহত্বের স্পর্শে।"


******

জীবনটার দৈর্ঘ্য খুবই কম। কেবল একটু পেছনে তাকিয়ে দেখবেন, মনে হবে যেন ৫ বছর আগের ঘটনাটা মাত্র অল্প ক'দিন আগের! আমাদের চারপাশে অনেক খারাপ মানুষ, প্রায়ই অনেক খারাপ ঘটনা ঘটে। আমরা যদি সেসবে আটকে যাই, শংকা-চিন্তা-হতাশা-দুঃখে পড়ে আমরা তখন আমাদের সত্যিকারের লক্ষ্যে পৌঁছতে আমরা বাধাগ্রস্ত হবো। ভালো চিন্তা, হৃদয়জোড়া ভালোবাসা, উচ্ছ্বাসভরা বুকে মানুষকে হাসিমুখ করে দেয়ার মতন কাজের বিকল্প নেই।


জীবনটা খুব ছোট। যে কোন ধরণের ক্ষুদ্র/খারাপ/মন্দ চিন্তা এবং দুশ্চিন্তা/শংকার মাঝে ডুবে থাকার মাঝে কোন ন্যুনতম কল্যাণ নেই। এগুলো কাটিয়ে উঠতে হবে, কষ্টের মাত্রা, খারাপ লাগার মাত্রা যেমনই হোক না কেন। কাজের মাঝে বেঁচে থাকতে হবে-- কল্যাণকর কাজ, ভালো কাজ, আনন্দময় কাজ।



******

ভালো ছাত্রত্বই কখনো ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ের নিশ্চয়তা দেয় না। অনেক স্কুল জীবনের 'ফার্স্ট বয়/ফার্স্ট গার্ল' নানান কারণে 'ভালো কোথাও' ভর্তি হতে পারে না। ভালো রেজাল্টও ভালো চাকুরির নিশ্চয়তা দেয় না। অনেক অনার্স সিজিপিএ পাওয়া ছেলেমেয়ের চেয়ে সময়মত পাশ করে বের হতে না পারা ছেলেরা অনেক অর্থ উপার্জন করেছে/করছে এমন উদাহরণ আছে ভুরি ভুরি। সৎ থাকলেও যে আপনার গায়ে অসততার কালিমা আসবে না তা বলা যায় না, অনেক সৎ মানুষকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসিয়ে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে এমন গল্পও আমাদের অনেকের আত্মীয়দের জীবনেই আছে। চরিত্র সুন্দর হলেও যে অপবাদ আসবে না, সেটাও বলা যায় না। অপবাদ দেয়ার কাজ যারা করতে ভালোবাসে তারা তো আল্লাহর প্রিয়তম বান্দাদেরকেও ছাড়েনি।


পরিশ্রম করলেই উত্তম ফল হবে তা নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। তবে পরিশ্রম না করলে উত্তম ফল অসম্ভব। আর হ্যাঁ, সবার পরিশ্রম একই রকম হয় না। একেকটা মানুষের জীবনের ঝড় একেকটা সময়ে আসে তীব্র হয়ে। সবার জীবন আলাদা, জীবনে পাওয়া রহমত আলাদা, জীবনের পদ্ধতি আর গড়ে ওঠা আলাদা, শক্তি আর দুর্বলতাও আলাদা। আল্লাহই সুনিপুণভাবে সবকিছু জানেন। কেবলমাত্র তার হাতেই সমস্ত ক্ষমতা। সমস্ত কিছু দেয়ার মালিকও তিনিই। তাই, কাজ করতে হবে সর্বাত্মক চেষ্টার সাথে, কিন্তু মনে রাখতে হবে ফলাফল একান্তই আল্লাহর দান। সমস্ত প্রার্থনা আর অন্তরের নিগূঢ় কথপোকথন কেবলই আল্লাহর সাথে হতে হবে।


******

টুকরো কথা ১

বিদায় তো তারই সুন্দর হয়, যার অবস্থান থাকে অর্থপূর্ণ। সুন্দর বিদায় মানে কি আর আড়ম্বর, জাঁকজমক, ঢাকঢোল? সুন্দর বিদায় হলো যতটুকু থাকা হলো, ততটুকুতে নিজ জীবনের অর্থ খুঁজে পাওয়া, রবের স্মরণ, ভালোবাসার মানুষদের অশ্রু। চাইলেই কি আর যাবার আয়োজন সুন্দর করতে পারে সবাই? সে তো তারই হয়, যার কাজ হয় সুন্দর।


*********

তবু পৃথিবীতে ভালোবাসা রয়ে যাবে।

হয়ত কেউ জীবনের যন্ত্রণায়, রোগের দংশনে বিদায় নেবে জগতসংসার ছেড়ে রবের কাছে, কেউ তারে বিদায় দিয়ে পড়ে থাকবে আমৃত্যু যুদ্ধে। এই কষ্টকর বৃত্তে তবু ভালোবাসা জয়ী হয়। রক্ত-জ্বালা-যন্ত্রণা-শংকা পেরিয়ে মানব হৃদয় প্রেমে ডুবে।


ভালোবাসুন পৃথিবীবাসীকে। দয়াময় আল্লাহ আপনায় ভালোবাসবেন। এ জগত পেরিয়ে অনন্ত জগতে পাবেন আনন্দভরা অভ্যর্থনা! ভালোবাসা-দয়া বৃথা যায় না...



*********

কাউকে উপদেশ দিতে হলে সেটা হবে ভালোবেসে। যাকে চিনিনা, এমন কাউকে অপ্রয়োজনীয় ও অযাচিত উপদেশ দেয়াও উচিত নয়; তা করতে হয় প্রজ্ঞার সাথে। তবে যাদের আমরা চিনি, জানি, ভালোবাসি, তাদের যদি আমরা দেখি বিষণ্ন, দুঃখে জর্জরিত, তখন সচেতনভাবেই পাশে থাকা উচিত। তাকে এমন কথা বলা উচিত নয় যাতে সে আহত হয়। বরং বুদ্ধিমত্তার সাথে, ভালোবেসেই কথা বলতে হবে যে জিনিসটায় তার উপকার হয়। মানুষ অনেক সময় উপদেশ ছাড়াই কাছের মানুষদের সান্নিধ্যে পেলেই সঠিক বুঝ পেয়ে যায়, অনেক সময় তাদের হয়ত বকা দিতে হয়। এই ব্যালান্সটা তখনই সম্ভব, যখন আমরা ওই মানুষটাকে জানবো ও ভালোবাসবো।


তবে কেউ যখন ডিপ্রেসড থাকে, তার অবস্থা আসলে তার নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকে না বলেই সে ডিপ্রেশনে ভুগে। সচেতনভাবেই তাদের পাশে থাকতে হবে, উপদেশও খেয়াল করে দেয়া উচিত। অন্তত এমন কথা বলা উচিত নয় যা হয়ত তাকে আরো আহত করবে।


*********

আপনার চোখগুলো যা দেখতে চায়, আপনি তো কেবল সেটাই দেখতে পান।


মূল দেখার বস্তুগুলো আমাদের কন্ট্রোলের বাইরে, আল্লাহ যা চান, সেটাই হয়। তাই, ঘটনাগুলো দেখতেই হয়। কিন্তু ঘটনা তো প্রতি মূহুর্তেই আমাদেরই চারপাশে অজস্র। ফ্যান ঘুরলে কাপড় নড়ে, বাইরে পাখি ডাকে, কেউ কাউকে কিছু বলতেসে, এমন হাজারো ঘটনা। এগুলোর মাঝে আমরা যেটা চাই, সেটাই কেবল খেয়াল করি। আর যা খেয়াল করি, তাকে নিজেদের ইচ্ছেমতন ব্যাখ্যা করি। রাস্তায় কেউ কাউকে থাপ্পড় দিলো-- এই দৃশ্য দেখে আপনি ভাবতে পারবেন এটা অন্যায়, ভাবতে পারবেন দুর্বলদের উপরে সবলের অত্যাচার, ভাবতে পারবেন এটা বড় ভাই ছোট ভাইকে শাসন করেছে। ঘটনা যাই হোক, যে অনুভূতি আপনি পেতে চান, আপনি নিজেকে সেটাই বিশ্বাস করান, ঘটনা তখন তেমনটিই মনে হয়।


*********

লোকে আপনাকে অশান্তিতে রাখে না। লোকে আপনাকে যন্ত্রণা দেয় না। আপনি বরং নিজের দিকে তাকান, নিজের গভীরে, হৃদয়ে, আপনার সত্ত্বার গভীরে। আপনি যে ঘটনাতে ত্যক্ত-বিরক্ত, সেই ঘটনাতেই দিব্যি আরেকজন হাসিমুখে কাটাচ্ছে জীবন। কষ্ট-যন্ত্রণা ঘটনার মাঝে নয়, বরং ঘটনাকে আপনি কীভাবে গ্রহণ করেন, তার মাঝে। তাই সহজভাবে গ্রহণ করুন জীবন। সুখে থাকার ভিন্ন কোনো উপায় নেই।


*********

একটু ধৈর্য ধরুন, শান্ত হোন।প্রথম প্রথম অনেক কিছুই কঠিন থাকে, পরে সেগুলো সহজ হয়ে যায়।\


*********

জীবনে পেছনের ঘটনাগুলোকে আপনি যেভাবে ব্যাখ্যা করবেন, আলাপে আনবেন, অনুভব করবেন-- সেগুলো সেভাবেই আপনাকে শক্তি দিবে অথবা ধ্বংস করবে। জীবনের ঘটনাকে আপনি যেভাবে নিবেন, জীবনের প্রভাব আপনার প্রতি অমনই হয়। ঘটনা যা-ই হোক।


*********

চারপাশের পরিবেশে খুব অশান্তি লাগে? মানুষগুলো কি জীবনটাকে দুর্বিসহ করে তুলছে? জ্বী, এরকমটা প্রায় সমস্ত মানুষের জীবনেই হয়। ইচ্ছে করবে অন্যায়কারী, অত্যাচারী, মিথ্যুক, নির্মম মানুষগুলোর বেড়াজাল থেকে পালাতে। কিন্তু হয়ত বেশিরভাগ মানুষই পারে না। আপনি মানুষগুলোকে বদলাতেও পারবেন না। আপনি শুধু পারবেন আপনাকে বদলাতে। আমরা শুধু আমাদের নিজেদের বদলাতে পারি। আপনি আপনাকে পরিবর্তন করুন। আপনার নিজেকে বদলে দিন। আপনার শান্তিটুকু আপনার নিজের মাঝে, সেটুকু নিয়ে থাকুন। পৃথিবীতে ভালো থাকার এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি।


*********

আপনার জীবনটা হলো আপনার পছন্দগুলোর ফলে বেছে নেয়া সিদ্ধান্তগুলোর সমষ্টি। আপনার যদি জীবনটাকে এখন সহ্য না হয়, বুঝে নিন আপনি এমন কিছু নিয়ে পড়ে আছেন যা আপনার ভুল পছন্দ। শীঘ্রই নিজের জন্য বেছে নিন ভালো কিছু।


*********

শব্দ দিয়ে অনেক কিছুকে গড়ে দেয়া যায়, আবার ধ্বংস করে দেয়া যায় অনেক কিছু, শব্দ ব্যবহারের আগে তাই খেয়াল করা উচিত।


*********

সংকীর্ণতার জিঞ্জির ভেঙ্গে মুক্তি পেতে চাইলে ভালোবাসতে শিখতে হবে, অসংকোচ ভালোবাসা।


*********

যখন সবকিছু অসহ্য লাগছে, তখনো কিন্তু দেখবেন আপনার অনেককিছু আরেকজনের লাইফে কমন হলেও সে অন্যরকম আছে। আসলে, সমস্যা বেশিরভাগটাই আমাদের নিজেদের মাঝেই। নিজেকে ভালো রাখুন।


*********

ভালো থাকা একটা অভ্যাস। খারাপ থাকাও। মন খারাপটাও অভ্যাস। দক্ষতাও অভ্যাসের ফসল। তাই, নিজের অভ্যাস নিজে গড়ুন, যেমন ইচ্ছে হয়, তেমনটাই থাকুন!


*********

যিনি দিতে শিখেননি, তিনি আসলে পেতেও শেখেননি। দেয়ার আনন্দ তো পাওয়ার আনন্দের চেয়ে আকাশ সমান বড়।


*********

শুধু এই জন্যেই কি আরেকজনকে ঘৃণা করছেন যে তার পাপগুলো সে আপনার চেয়ে ভিন্ন পদ্ধতিতে করে?


*********

আপনি কেবল চেষ্টা করতে পারেন। ফলাফল ঘটানোর শক্তি-ক্ষমতা আপনার নেই, তা ঘটাতে আপনি পারবেন না। ফলাফলের চিন্তা বাদ দিন।


*********

গ্রহণ করে নিন জীবনে যা কিছু আসে, আসবে। হাসিমুখ থাকুন, চিন্তাক্লিষ্ট হয়ে দুশ্চিন্তা ও আশংকা করে নিজেকে নষ্ট করবেন না।


*********

কখনো কখনো শব্দেরা আমাদের বুকের কথাগুলোকে প্রকাশের জন্য একদমই তুচ্ছ হয়ে যায়। তখন হৃদয়ের আর্তি আর কাঁপুনিগুলো এমন এক ভাষায় তরঙ্গায়িত হয় যা কেবল তিনিই শুনতে পান।


*********

আজকের খুব তীব্র কষ্টের অনুভূতিটা আর কয়েক মাস পরে আরে এমন তীব্র লাগবে না, দেখবেন দিব্যি এটা মনে করে হাসছেন আর ভাবছেন 'আহা সময়টা কেমন করেই না পার করেছি!'... জীবনটা এমনই।


*********

"মন ভালো নেই"-- এই কথা আওড়ায় যিনি, তার আপাতত মন ভালো হবার কোনো সম্ভাবনা নেই। এটা বলা থেকে বিরত থাকতে হবে যদি সত্যিই মন ভালো করতে চান।


*********

এই তীব্র রোদে যখন 'গ্রীষ্মকালের' উপরে রাগ হয়, তখন একটু সচেতন মানুষ ঠিক অনুভব করতে পারেন যে অনেক ঠান্ডার দেশে মানুষ রোদের জন্য কতটা লালায়িত থাকে।   আপনার জন্য অনাকাংখিত বস্তুটি হয়ত কারো প্রবল প্রার্থনার চাওয়াও হতে পারে। ক্ষুব্ধ হবার আগে ভেবে দেখুন একটু! :)


*********

যে কাজ আপনার আত্মাকে আনন্দিত করে, সে কাজগুলো করুন। দেখবেন আপনি বদলে যেতে থাকবেন।


*********

জীবনের ভুল আর কষ্টগুলো অর্থহীন নয়। সেগুলো থেকে পাওয়া শিক্ষাই তো আমাদের সামনে আরো এগিয়ে যাওয়ার শক্তি যোগায়।


*********

আপনার চোখগুলো যা দেখতে চায়, আপনি তো কেবল সেটাই দেখতে পান।


*********

কোনো ভালো কাজ করতে ইচ্ছে হলে সাথে সাথে করে ফেলুন। সংশয় করবেন না। শেষে হয়ত কাজটা করা হবেনা।


*********

ঘড়ির দিকে তাকিয়ে কী হবে? বরং সে যা করে, আপনিও তাই করুন। লক্ষ্যপানে ছুটতে থাকুন একটানা।


*********

আপনি যখন কিছু পান, তখন কিছু জিনিস থাকে যা হারান। আপনি যখন কিছু হারান, তখন কিছু জিনিস পেয়ে থাকেন। এই ভারসাম্যই জীবন। জীবনটাকে অন্যভাবেও দেখা যায়, অনুভব করা যায়।


*********

প্রবঞ্চিত হওয়া ভালো। উপেক্ষিত হওয়াও। নইলে কেমন করে বুঝবেন ভালোবাসা পাওয়া আর মূল্যায়িত হবার আনন্দ ও মর্যাদা?
*********

আপনি যখন কিছু পান, তখন কিছু জিনিস থাকে যা হারান। আপনি যখন কিছু হারান, তখন কিছু জিনিস পেয়ে থাকেন। এই ভারসাম্যই জীবন। জীবনটাকে অন্যভাবেও দেখা যায়, অনুভব করা যায়।*********

বেশি ভালো কখনই ভালো না। স্বর্ণের মধ্যে ইচ্ছে করেই খাদ মেশানো হয় যেন তা টিকে থাকে। মানুষও বেশি ভালো দেখতে পেলে বুঝতে হবে তা ভঙ্গুর-- হয়ত তার খাদ দেখা যাচ্ছে না, অথবা সে আপাতত এই অবস্থায় আছে, খুব শীঘ্রই ভেঙ্গে যাবে। ভুলত্রুটি মেশানো, অতি পারফেক্ট না হওয়া মানুষগুলোই শক্তপোক্ত, বাস্তব। অবাস্তব ও কল্পনাতে তো কত কিছুই হয়, জাগতিক পৃথিবীতে সেগুলোর অস্তিত্ব রয় না।
*********

আজকের দিনটি সুন্দর। এটা বর্তমান। আজ আমরা যদি হাল না ছেড়ে একে জীবনের সেরা দিন হিসেবে তৈরি করতে চেষ্টা করি, তা হবে বিশাল প্রাপ্তি। হাল ছাড়বেন না।

*********

"আমি তো চারপাশে মানুষদের প্রাণ উজাড় করে ভালোবাসা বিলিয়ে দেবারই যথেষ্ট সময় পাইনা, লোকে কেমন করে এত রাগ-ক্রোধ-ঘৃণা করার সময় পায় সেটাও তো বুঝেই পাইনা!"

*********

কারো প্রতি রাগ প্রকাশ না করে রাগের বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বললে ঝগড়ার পরিবর্তে হয়ত সমাধান পাবেন।

*********

কোথাও গিয়ে উপস্থিত সবার চেয়ে নিজেকে উত্তম অথবা বড় মনে করাটা কিন্তু আত্মবিশ্বাস না, বরং নিজেকে কারো সাথে তুলনা করতে না যাওয়াই হলো আত্মবিশ্বাস।


হাল ছেড়ো না বন্ধু। এই হাল না ছাড়াই তো জীবন। এই জীবন সমদ্রের পুরোটাই তো উত্তাল ঢেউ। হাল ছাড়ার কিছু নেই, দিগন্ত দেখারও কিছু নেই। যারা মনে করে হাল ঠিকই আছে, ধরে ফেলেছি-- তারাই ডুবন্ত। তাই ধরে থাকো হাল। লেগে থাকো।

*********

আমরা জীবনে যা করি, যা অর্জন করি, যা অভুতপূর্ব জিনিস শিখি-- সব আমাদের মাঝেই ছিলো, থাকে। সময়ে সময়ে আমরা উপলব্ধি করি। কিন্তু সেই উপলব্ধি করতে একটা 'জার্নির' মধ্য দিয়ে যেতে হয়। পাওলো কোয়েলহো আলকেমিস্টে এই ব্যাপারটা বুঝিয়েছে। একটা অভিজ্ঞতার আগে-পরের আমরা একই মানুষ না। একই জিনিস আমাদের ভিন্নভাবে ধরা দেয়, দেখার চোখ বদলায়। অভিজ্ঞতা খুব খেলো কিছু না। তাই, যত তিক্ত হোক, অভিজ্ঞতার তুলনা হয় না। নিজের ভেতরেই যা ছিলো, তাকেই নতুন করে খুঁজে পেতেই আমরা ছুটে বেড়াই পৃথিবীর এই প্রান্তর থেকে অন্য প্রান্তরে।

সময়ের সাথে সাথে পৃথিবী যতটা বদলায়, দেখার চোখটা তার চেয়ে অনেক বেশিই বদলায়...

*********

আপনার কি মনে পড়ে শেষবার যখন মনে হয়েছিলো এই কষ্ট আর আপনি সহ্য করতে পারবেন না! আপনি পেরেছেন, এখনো পারবেন, আগামীতেও পারবেন। তাই অধৈর্য হয়েন না, আশাহত হবেন না।

মানুষ বদলায়, খুব বদলায়। সময়ের সাথে সাথে বদলায় রুচি, দেখার চোখ, অনুভবের হৃদয়। পরিবর্তনকে গ্রহণ করে নেয়াই নয়, তাকে অভিনন্দিত করতে না পারলে আমরা পরাজিত হবো। মন্থর থাকা স্রষ্টার সৃষ্টির কোথাও নেই। গাছের পাতা বদলায়, রং বদলায় আকাশের, ভালোলাগা-মন্দলাগা বদলায় মানুষের হৃদয়ের, বদলে যায় নদীর গতিপথ, ছায়াপথ, নীহারিকা, নক্ষত্রালোক, মায়াবী রাতের ক্ষণগুলোও... থেমে থাকেনা আমাদের আয়ু, জীবনকাল। তাই ভাংগা গড়ার এই জীবনের পরিবর্তনকে গ্রহণ করে নেয়াতেই উপায়...

*********

একজন জ্ঞানী মানুষের কাছে এসে এক ব্যক্তি বলেছিলো,

- আমি তো খুব ক্ষুদ্র, আমি যতই আন্তরিক চেষ্টা করি না কেন, আমি কি আদৌ কোনো পরিবর্তন করতে পারবো কিছু?


জ্ঞানী মানুষটি বলেছিলেন,

- ক্ষুদ্র কিছুর শক্তি নেই বলছো? তাহলে অন্ধকার রাতে মশার সাথে কাটিয়ো, বুঝবে ক্ষুদ্র হলেও ডেডিকেটেড থাকলে কেউ কতটা শক্তিশালী!

২৩-০৪-২০২০

আকাশ কালো মেঘ করে, শোঁ-শোঁ দমকা হাওয়া বইয়ে ঢাকায় বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির অনুভূতিটা একটা খুব আনন্দের অনুভূতি। এসময়ে রাস্তায় আটকে গিয়ে বিরক্ত লা...